বাজারে বা দোকানে মিনারেল ওয়াটার, কোকা-কোলা, সেভেনআপ, স্প্রাইট, আরসি কোলা ইত্যাদি পানীয় এবং বিভিন্ন ফলের জুস পাওয়া যায় প্লাস্টিকের বোতলে। এ বোতলগুলো পলিইথিলিন টেরেপথেলেট নামের প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি। একবার ব্যবহার্য। কিন্তু এই বোতলগুলো হরহামেশাই একাধিকবার ব্যবহার হচ্ছে। আমরা প্রায় সবাই এগুলো সপ্তাহ বা মাস ধরে বারবার ব্যবহার করি। বস্তুত যত দিন নষ্ট না হচ্ছে, তত দিনই ব্যবহার করি। যদিও সঠিকভাবে পরিষ্কার করে ব্যবহার করলে প্লাস্টিকের একই বোতল বেশ কয়েক দিন ব্যবহার করা যেতে পারে, তবুও বোতলগুলো পরিষ্কার করা বা পরিষ্কার রাখা ততটা সহজ নয় বলে একই বোতল বারবার ব্যবহারে স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে বেশ।
পানির গ্লাস বা মগের মুখ বড়। এগুলো ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার রাখা সহজ। কিন্তু বোতলের মুখ সরু বলে এর ভেতরটা পরিষ্কার করা সত্যিই বেশ কঠিন। তা ছাড়া ব্যবহারের সময় হাতের স্পর্শে বা ঠোঁটের ছোঁয়ায় জীবাণু লেগে যেতে পারে বোতলের মুখের প্যাঁচে। পরে সেখান থেকে কিছু জীবাণু চলে যাবে বোতলের ভেতরে, কিছু লাগবে বোতলের মুখ বন্ধ করার সময় এর ক্যাপে বা ঢাকনায়। দিনে দিনে সংখ্যায় বৃদ্ধি পাবে জীবাণু এবং বাড়াবে স্বাস্থ্যঝুঁকি। একই বোতল থেকে একাধিক ব্যক্তি মুখ লাগিয়ে পানি বা পানীয় পান করলে জীবাণু সংক্রমণের আশঙ্কা আরও বেড়ে যায়। বারবার ব্যবহারের ফলে নরম প্লাস্টিকের বোতল এবড়োখেবড়ো হয়ে যায়। বোতলের গায়ের নানা স্থানে টোল পড়ে। টোল পড়া এসব জায়গায় জীবাণু নিরাপদে বসবাস ও বংশ বৃদ্ধি করতে থাকে। এসব জীবাণুর কারণে পেটের নানা পীড়া, যেমন পেটব্যথা, বমি, পাতলা পায়খানা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। তা ছাড়া বারবার ব্যবহারের সময় বোতলের প্লাস্টিকের কোনো ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ পানিতে মিশে শরীরের ক্ষতি করে কি না, সে চিন্তাও মাথায় রাখতে হবে। তাই একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিকের বোতল একাধিকবার ব্যবহার না করাই ভালো। আর একাধিকবার ব্যবহার করতে চাইলে অবশ্যই কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে—
- বোতল সব সময় পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করতে হবে। হাতের বা ঠোঁটের ছোঁয়ায় বোতলের মুখে ও ক্যাপে যেন জীবাণু না লাগে, সে খেয়াল রাখতে হবে। বোতলের মুখে মুখ লাগিয়ে পানি বা পানীয় পান না করে বোতল থেকে ঢেলে পান করতে হবে। সেটা গ্লাসে ঢেলেই হোক কিংবা বোতল থেকে সরাসরি মুখে ঢেলেই হোক। অন্যের মুখে দেওয়া বোতলের পানি বা পানীয় পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
- বোতলটি দ্বিতীয়বার ব্যবহারের আগে এর মুখের প্যাঁচ ও ক্যাপ এবং ভেতরটা ভালো করে সাবানের ফেনা ও নিরাপদ পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
- বারবার ব্যবহারে বোতলের গায়ে যেন টোল না পড়ে, সে খেয়াল রাখতে হবে। টোল পড়া এবড়োখেবড়ো বোতল বাদ দিতে হবে।
- পানিতে লৌহ ও অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ থাকে। সে জন্য বারবার ব্যবহারে বোতলের ভেতরটা লাল হয়ে যেতে পারে। বিশ্রি দেখাবে তখন। জীবাণুও থাকবে বেশ। এরূপ বোতলের ব্যবহার তখন অবশ্যই বাদ দিতে হবে।
পোস্টটি ভালো লাগলে বন্ধুদের শেয়ার করুন ও কমেন্ট করে আমাদেরকে জানান ।
No comments:
Post a Comment